Friday, January 3, 2014

লেবুর খোসা



জেনে নিন লেবুর খোসার ১৪ টি ব্যবহার 



লেবু ভিটামিন ‘সি’তে ভরা। অতিপরিচিত এই লেবুর আছে অনন্য সব রোগ প্রতিরোধী গুণ। আবার লেবুর খোসাকে অপ্রয়োজনীয় ভেবে অনেকে ফেলে দেয়। অথচ এই বাতাবি লেবুর খোসা যে বহু কাজে ব্যবহার করা যায় এটা অনেকেরই অজানা। সেরকম ১৪ টি ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদের জানানো হলো।


১.খাদ্য হিসাবেঃ লেবুর খোসাতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল। একই সাথে এটি প্রাকৃতিকভাবে হজম সহায়ক। লেমন জিস্ট, লেমন সুগার, লেমন অলিভ ওয়েল কিংবা লেমন পিপার এইসব নামের খাদ্য বানিয়ে খেতে পারুন।

২.পিপড়া এবং কীটপতঙ্গদের হাত থেকে বাঁচতেঃ বুকসেলফের নিচে, আলমারির চিপায়, দরজার পাশে সহ যে সব জায়গাতে পিপড়া অবস্থান করতে পারে সেসব জায়গায় লেবুর খোসা কুচি কুচি করে ছড়িয়ে দিন। পিপড়া আর ঘরে থাকবে না। মাছিও লেবু থেকে দূরে অবস্থান করে।

৩. ফ্রিজ সতেজ রাখুনঃ ফ্রিজের ভেতরে দুই একটি লেবুর খোসা রেখে দিন। ফ্রিজ থাকবে গন্ধমুক্ত এবং লেবুর সুগন্ধময়।

৪.আবর্জনার দূর্গন্ধনাশকঃ দূর্গন্ধময় আবর্জনার মধ্যে লেবুর খোসা নিক্ষেপ করুন। লেবুর খোসা দূর্গন্ধ শুষে নিবে।

৫.চায়ের কেটলি কিংবা কফি পট পরিষ্কার করতেঃ জমে থাকা চায়ের দাগ পরিস্কারের ক্ষেত্রে কেটলিতে পানি নিয়ে তাতে লেবুর খোসার ছোট ছোট টুকরা দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। এক ঘন্টা পর তাপ বন্ধ করে ময়লা জায়গা পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

কফি পট পরিষ্কার করতে লবণ যোগ করে তাতে বরফ ও লেবুর খোসা দিয়ে এক থেকে দুই মিনিট ঘষে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৬.কাটিং বোর্ড পরিষ্কারঃ কাটিং বোর্ডের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল পরিস্কার করা সম্ভব লেবুর খোসা ব্যবহার করে। কাটিং বোর্ডের সব ময়লা দাগ পরিস্কার করতে অর্ধেক লেবু কেটে তাতে কয়েক সেকেন্ড রেখে দিলে দেখবেন পরিস্কার হয়ে গেছে।

৭.ডিসওয়াশার দূর্গন্ধমুক্ত করতেঃ এটির মধ্যে লেবুর খোসা ঘষলে দূর্গন্ধমুক্ত হয়ে যায় এবং সতেজ থাকে।

৮. মাইক্রোওয়েভ পরিষ্কার করতেঃ মাইক্রোওয়েভের তেল চিটচিটে হলে বাটিতে পানি নিয়ে তাতে লেবুর খোসা ছেড়ে দিয়ে গরম করতে হবে। এরপর পানি ফেলে দিয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। তাতেই মাইক্রোওয়েভ ঝকঝকে হয়ে যাবে।

৯.রান্নাঘর সতেজ রাখতেঃ রান্নাঘরের গন্ধযুক্ত ময়লা পরিষ্কারে লেবুর খোসা ব্যবহার করা যায়। এতে রান্নাঘর সতেজ থাকে।

১০.ড্রয়ারের সুগন্ধী হিসাবেঃ লেবুর খোসা সূর্যের তাপে শুষ্ক করে ড্রয়ারে রেখে দিলে সেটি ড্রয়ারকে সুগন্ধ রাখবে।

১১.ত্বক উজ্জ্বল করেঃ ত্বকে মেসেজ করে ধুয়ে ফেললে নরম, কোমল ও উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া যায়।

১২. নখ উজ্জ্বল করতেঃ হাত বা পায়ের নখে লেবুর খোসা ঘসলে নখ পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল সাদা হয়।

১৩. বয়স দাগ দূর করতেঃ মানুষের বয়স যখন বেড়ে যায় তখন শরীরে বয়স দাগ পড়ে। এইসব দাগের উপর লেবুর খোসা ঘষলে তা দূর হয়ে যায়।

১৪. স্কিন টনিক হিসাবেঃ লেবুর খোসা ত্বকে অল্প ঘষে ধুয়ে ফেললে এটি ত্বকের স্কিন টনিক হিসেবে কাজ করবে।



সকালে এক গ্লাস উষ্ণ লেবু পানি

জেনে নিন সকালে ১ গ্লাস উষ্ণ লেবুর পানি পান করার সুফল :

১) হজমে সহায়ক :
শরীর থেকে অযাচিত পদার্থ এবং টক্সিন বের করে দেয় লেবুর রস। আমাদের হজমের জন্য ব্যবহৃত লালা এবং পাচক রসের সাথে বেশ মিল আছে এর গঠন এবং কাজের। আর যকৃতের থেকে হজমে সহায়ক এক ধরণের পদার্থ নিঃসরণেও এটি সহায়তা করে।

২) ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে :
শরীরে মুত্রের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং এর মাধ্যমে খুব দ্রুত ক্ষতিকর এবং বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এছাড়া মূত্রনালির স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এটি সহায়ক।

৩) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় :
লেবুতে থাকে অনেকটা ভিটামিন সি এবং লৌহ যা ঠাণ্ডাজ্বর জাতীয় রোগের বিরুদ্ধে ভীষণ কার্যকর। এতে আরও আছে পটাসিয়াম যা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকে সক্রিয় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে। এতে থাকা অ্যাসকরবিক এসিড প্রদাহ দূর করে এবং অ্যাজমা বা এজাতীয় শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমায়। এছাড়াও কফ কমাতে সাহায্য করে লেবু।

৪) শরীরের পিএইচ মাত্রা ঠিক রাখে :
এর অর্থ হলো শরীরের অম্ল-ক্ষারকের মাত্রা ঠিক রাখে লেবু। লেবু হজম হয়ে যাবার পর কিন্তু আর অম্লীয় থাকে না, ক্ষারীয় হয়ে যায়। ফলে এটি রক্তে মিশে যায় এবং শরীরের অম্লতা বাড়তে দেয় না। অম্লতা বেড়ে গেলেই দেখা দেয় রোগ।

৫) ত্বক পরিষ্কার করে :
ত্বকের কুঞ্চন এবং দাগ দূর করে লেবুতে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বকের জন্য খুব দরকারি হল ভিটামিন সি। ব্রণ বা অ্যাকনি সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া এটি দূর করে। আর ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও এটি কার্যকরী।

৬) আপনার মন ভালো করে দেয় :
সকালেই প্রাণচাঞ্চল্য বাড়িয়ে দিতে এর জুড়ি নেই। খাবার থেকে শক্তি শোষণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় লেবু। আর এর গন্ধে আপনার মন ফুরফুরে হয়ে উঠবে নিমিষেই। দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্ণতা দূরীকরণেও এটি অসামান্য।

৭) সেরে ওঠার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে :
ক্ষতস্থান সেরে তুলতে সাহায্য করে অ্যাসকরবিক এসিড। আর হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতেও এটি সহায়ক। স্ট্রেস এবং যে কোনও ধরণের ব্যাথার উপশম করে ভিটামিন সি।

৮) নিঃশ্বাসে আনে তরতাজা ভাব :
নিঃশ্বাসে লেবুর সতেজতা আনা ছাড়াও, এভাবে গরম পানির সাথে লেবুর রস পানে দাঁতের ব্যথা এবং জিঞ্জিভাইটিসের উপশম হয়। তবে এটা পানের পর পরই দাঁত ব্রাশ করবেন না কারণ সাইট্রিক এসিড দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে ফেলে। আগে দাঁত ব্রাশ করে তার পর এটা পান করা ভালো। আর লেবুপানি পান করার পর বিশুদ্ধ পানি খেতে পারেন এক গ্লাস।

৯) শরীরে তরলের পরিমাণ ঠিক রাখে :
রাতে ঘুমানোর সময়ে যে পানি খরচ হয় সেটা পূরণ হয়ে যায় সকাল সকাল এই এক গ্লাস পানি পানের মাধ্যমে।

১০) ওজন কমাতে সহায়ক :
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে পেক্টিন থাকে। আঁশজাতীয় এই পদার্থ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রনে রাখে। ফলে ওজন কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের খাবারে এমন অম্লজাতীয় খাবার কম থাকে তাদের ওজন বাড়ে বেশি।


কাঁচা মরিচে এত উপকার


কাঁচা মরিচে আছে ঝাল। ক্যাপসিকাম অ্যানাম জাতের একটি সবজি হলো এই কাঁচা মরিচ। আমাদের এই উপমহাদেশের বাইরে মেক্সিকো ও দক্ষিণ আমেরিকায় এর সবচেয়ে বেশি কদর। খাবারে স্বাদ আর ঝাঁজ আনতে কাঁচা মরিচের তুলনা নেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, কাঁচা মরিচ হলো ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি-এর এক দারুণ উৎস। মাত্র আধকাপ কাটা কাঁচা মরিচে আছে প্রায় ১৮২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, যা আমাদের দৈনিক ভিটামিন সি-এর চাহিদার দ্বিগুণ পূরণ করতে পারবে। আর ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আধা কাপ পরিমাণ কাটা কাঁচা মরিচ বা এর পেস্টে যে পরিমাণ ভিটামিন এ আছে, তা পুরুষদের দৈনিক চাহিদার ২৯ শতাংশ এবং নারীদের দৈনিক চাহিদার ৩৮ শতাংশ পূরণ করতে পারবে। সমপরিমাণ কাঁচা মরিচে এ ছাড়া আছে আড়াই শ মিলিগ্রামের মতো পটাশিয়াম, আর বেশ কিছু পরিমাণ লৌহ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই কাঁচা মরিচের একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ক্যাপসেইসিন, যা দেহের বিশেষ নিউরোপেপটাইডকে অবদমন করার ক্ষমতা রাখে এবং এভাবে ব্যথা কমাতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ক্যাপসেইসিন ক্রিম স্নায়ুর ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও সোরিয়াসিসে ব্যবহূত হয়। তাই কাঁচা মরিচে কেবল ঝালই নয়, আছে অনেক উপকারও। 

ডাব ও নারকেলের শত গুণ

একটা জিনিস ভেবে দেখুন তো, পুরানো আমলে তো চিকিৎসা ব্যবস্থা এত উন্নত ছিল না। তখন মানুষ কি দিয়ে চিকিৎসা করতেন নিজেদের? হ্যাঁ, তখন চিকিৎসা হতো ভেষজ বা হারবাল উপায়ে। এই ভেষজ চিকিৎসা একদিকে যেমন নিরাপদ, তেমনই সহজলভ্য আর নিরাময় ক্ষমতা সম্পন্ন। আসুন, জেনে নেই কয়েকটি সহজ ভেষজ চিকিৎসা সম্পর্কে।

* নাক দিয়ে রক্ত পড়লে ডাবের পানি রোজ খাওয়া উচিত। এর সঙ্গে খালি পেটে নারকেল খেলেও নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়।

* যেসব মায়েরা সন্তানকে পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ খাওয়াতে পারেন না তাদের জন্যে কলমি শাক দারুণ উপকারী। কলমি শাক বেটে ১/২ চামচ রস ঘি দিয়ে সাঁতলে নিয়ে দিনে দুবার সকালে ও বিকালে খেলে মায়ের দুধ বাড়বে। কলমি শাকের ভাজা খেলে তাতে কিন্তু কাজ হবে না।

* অজীর্ণ রোগে বা বদহজমে নিমের ছাল আদর্শ ওষুধ। ৪/৫ গ্রাম নিমের ছাল এককাপ গরম পানিতে একরাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে সেই পানি ছেঁকে খালি পেটে খেলে অজীর্ণ সেরে যাবে।


*লিভার বা যকৃতের ব্যথা সারাতেও নিম এক নম্বর। ১ গ্রাম নিমের ছাল, ১/২ গ্রাম কাঁচা হলুদ ও ১ গ্রাম খানিক শুকনো আমলকির গুঁড়োর সাথে মিশিয়ে খালি পেটে খেলে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যথা দূর হয়ে যাবে।

* যে সব শিশু রাতে না ঘুমিয়ে ছটফট বা কান্নাকাটি করে তারা সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে। এদেরও অল্প গরম দুধের সাথে (গরুর দুধ) ২০/২৫ ফোঁটা কলমির রস খাওয়ালে এদের কোষ্ঠকাঠিন্য সেরে যাবে। তবে, শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে খাওয়ানো ভালো।

*মুখে উঠেছে ব্রণ? একটু খানি লবঙ্গ বাটা লাগিয়ে দিন ক্ষত স্থানে। দ্রুত মিলিয়ে যাবে, আবার দাগও থাকবে না।

ডাব ও নারকেলের শত গুণ :

১. ডাবের পানিতে ১৯টি খনিজ উপাদান রয়েছে। ডাব খেলে ত্বকের কমনীয়তা বাড়ে।
২. বসন্ত হলে কচি ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুলে দাগ চলে যায়।
৩. মুখে ব্রণের দাগ হলে ডাবের পানি দিয়ে ধুলে দাগ চলে যায়।
৪. একটু তুলো ডাবের পানিতে ভিজিয়ে মুখে লাগিয়ে শুকোতে দিন। তারপর হাত দিয়ে আস্তে আস্তে মুখ ঘষে দেবেন। এতে মুখে সুন্দর উজ্জ্বল একটা ভাব চলে আসবে। মুখের ত্বক কোমল ও মসৃণ হবে।
৫. নানী-দাদীরা সেকালে নারকেল দিয়ে চুল ধুতেন। চুলের পরিচর্যায় নারকেল বেশ উপকারী একটা নারকেলের অর্ধেক নিয়ে কুড়িয়ে আধা কাপ অথবা এক কাপ গরম পানির সাথে ভালো করে চটকে দুধ বের করে নিয়ে পরিষ্কার দুধের সাথে একটা কাগজী লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় বিলি কেটে চামড়ায় ভালো ভাবে ম্যাসাজ করে ২০-৩০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানিতে চুল ধুয়ে নিন।

No comments:

Post a Comment